Posted by Unknown
Thursday, January 23, 2014
0 comments
২৩ জানুয়ারি ২০১৪, বৃহস্পতিবার, রাত ১১ টা ৫১মিনিট
অনেক দিন হয়ে গেল অনলাইন ডাইরিতে কিছু লেখা হয় না। এর মধ্যে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঘটে গেছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি হল আমার মা- কে হারিয়েছি গত সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখে। মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়েছিল তাঁর। কত সহজে বলে ফেললাম তাই না? অথচ আমি জানি মা হারানোর কী ব্যাথা আমার অন্তরটাকে গ্রাস করেছিল।একে একে ৮ দিন তাঁর মৃত্যুশয্যার পাশে বসে দেখেছি তাঁর একটু একটু করে না ফেরার দেশে চলে যাওয়াকে।
মা, তুমি যেখানে থাকো, ভাল থেকো। আমি জানি উপরওয়ালা তোমার সাথে অতি সদাচরণই করবেন। পুণ্যবতীদের দুনিয়াতেই চেনা যায়।
গাইনি ওয়ার্ড শেষ করে ফেলেছি। এর মধ্যে মেডিসিন ও শেষ। গত ১২ জানুয়ারি থেকে সার্জারী শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই অ্যাবসেণ্ট। আমি কী করব??? ফুড পয়জনিং এর জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ১০ তারিখে। সাথে ছিল প্রচণ্ড জ্বর। যা হোক এবেলায় আমি অনেকটাই সুস্থ। চলছে সার্জারী ওয়ার্ড-ওটি। থেমে থেমে॥
Posted by Unknown
Tuesday, August 20, 2013
0 comments
২০ জুলাই ২০১৩, মঙ্গলবার, রাত ৯টা ৫৮মিনিট
গত পরশু অর্থাত্ রবিবার ছিল অ্যাডমিশন নাইট। আমরা ছিলাম পাঁচজন। সবাই কাজের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। রাতে রোগীর চাপ বেশ ভালই ছিল। কিছু আজব কিসিমের রোগীও পেলাম।
এক রোগীর লোক পুরুষ ডাক্তার দিয়ে রোগী দেখাবেন না। কী আর করা!! ভর্তির টিকেটের উপর বড় করে লিখে দিলাম Pt refused to see a male doctor.আর যায় কই! হাতে ধরে পায়ে পড়ে হলে রোগীকে দেখতেই হবে-এমন অবস্থা তৈরি করল রোগীর লোকজন।
এক রোগীর কাছ থেকে একটা পান চেয়ে খেলাম। স্বাদ খারাপ ছিল না। রোগীর লোকের গাইট থেকে জর্দা দেয়া পান মুখে পুরে চিবুতে চিবুতে রোগীর সাথে কথা বললে একটা ভাব আসে!! ফীলিংসটা খারাপ না। আপনারাও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
রাত চারটা কোনোমতে। হঠাত্ লাইট অফ। ফ্যান অফ। টিভি চলে। ওমা! একি ভুতুড়ে কান্ড। একটু পর সব নিভে গেল। হঠাত্অন্ধকার গ্রাস করে নিল রাতের কোলাহলকে। কিছু সময়ের জন্য। এর পর আবার চিত্কার চেচামেচি। কারেন্ট নাই কেন?? কখন আসবে??
এর মধ্যে এক রোগী আসল বাপ ময়ের অনেক আদরের ধন টাইপ এর। ছয় মাসেই ডেলিভারী হয়ে গেল। বাচ্চা জীবিত ছিল কিছুক্ষণ। রোগীর প্রলাপে অসহ্য হয়ে উঠেছিল রাতের পরিবেশ। হুদাই হুদাই যে কোনো পেশেন্ট এত বকতে পারে তা সেদিনই প্রথম দেখলাম। আমাকে কেউ দেখছে না কেন?তোমরা আমার কাছে নাই কেন? তোমরা এত কথা বল কেন?? আব্বু কই? আমার ফোন কই? এরূপ নানান প্রলাপে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠল। সকাল হতে তখনও ঢের বাকি ছিল।
এর মধ্যে ডেলিভারি রুম এ সব নতুন নতুন রোগীর আগমন ঘটে গেছে। ডেলিভারীও হয়ে গেল দুই তিনজনের। অন্ধকারের মধ্যেই এপিসিওটমি রিপেয়ার। মোবাইলের মৃদু আলোয় সব কিছু ভুতুড়ে লাগছিল। ওফ! কী যে অভিজ্ঞতা!!
২০ আগস্ট ২০১৩, মঙ্গলবার; রাত ৯ টা ৪৬ মিনিট
আজ মঙ্গলবার। অনেক দিন পর ডাইরীর পাতায় কিছু লিখতে বসেছি। রোজনামচা মোতাবেক আজ গাইনি ওয়ার্ডে অ্যাডমিশন মর্নিং ছিল। সকাল থেকেই রোগীর চাপ মোটামুটি পর্যায়ে ছিল। কিন্তু নানান দিকে ছোটাছুটি করতে গিয়ে একেবারে গলদঘর্ম হয়ে গিয়েছি।
রোজার ঈদ হয়েছে গত ৯ তারিখে। শুক্রবার। আগেরদিন বৃহষ্পতিবারও ছিল অ্যাডমিশন ডে। ৮-১১ তারিখ - এই চারদিনের তিন দিনই ছিল অ্যাডমিশন। ঈদের মধ্যে যারা ডিউটি করেছে তাদেরকে কিছু গিফট দেয়ার আয়োজন করেছে ওয়ার্ডের সিনিয়র আপুরা। আমি ঈদের আগের দিন বাড়ি গিয়েছিলাম এবং ফিরেছি ১২ তারিখে। যথারীতি ডিউটি করায়, ঈদ রোস্টারে আমার নাম না থাক সত্বেও আমাকেও গিফট দেয়া হল বিশেষ দায়িত্বশীলতার জন্য। feeling Inspired.
Posted by Unknown
Friday, July 19, 2013
0 comments
১৯ জুলাই ২০১৩ বিকাল ৩:০৪ মিনিট
০৯ রমজান
ঘটনা ঘটে গত কাল সন্ধ্যায়। অর্থাত্ ১৮ জুলাই ইফতারের পর পর। আমি তখন ইভেনিং ডিউটিতে, স্পেসিফিক বললে গাইনি ওটিতে। রাত আনুমানিক ৮ টা হবে সময়। একটা সিজারিয়ান সেকশন এ assist করছি। আমার মোবাইলে অনবরত কল এসেই যাচ্ছে। ধরতে পারছি না।
কাজ শেষ করে কল ব্যাক করলাম। রুমমেটের অস্থির কণ্ঠ। আরে আগুন লাগছে ৪০০৩ নম্বর রুমে। আমি থাকি ৪০০৭ এ। আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন এ যাত্রায়। আগুনে আসলেই অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। দুইটা ল্যাপটপ, একজনের সব বই পত্র পুড়ে গেছে। বিছানা পত্র সব পুড়ে ছাই। এত অল্প সময়ে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।
১৯ জুলাই ২০১৩, সকাল ০৮:৫৭ মিনিট
০৯ রমজান
গত আড়াই বছর ধরে প্রায় নিয়মিত রাত জাগি। কতদিন যে সকালের সূর্য উঠতে দেখেছি তার ইয়ত্তা নাই। সকালের সূর্য দেখা কিন্তু যে সে কথা না। এটা দেখতে চাইলে ধৈর্য লাগে।
নাইট ডিউটি থেকে এসে নেট এ বসলাম। সারা রাত নেট চালানোর ইচ্ছা থাকলেও রাত পৌনে দুটোর দিকে চোখ দুটো বুজে এল প্রায়। ঝাঁপিয়ে পড়লাম বিছানায়। মাত্র ঘণ্টা খানেক ঘুমিয়েই উঠে পড়লাম। সেহরি করে নামায পড়ে ঘুমান আর হল না। বসে গেলাম নেট এ। ওয়েবসাইটের কাজ গুলো সেরে নিলাম। ডাইরি লিখলাম। ডাইরি লিখাটা কেমন যেন উপভোগ করতে শুরু করেছি। চালিয়ে যেতে চাই। লিখতে চাই প্রতিদিন। নাহ, আজকেই নেট এর কানেকশন বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বকেয়া বিল পরিশোধ করতে হয়, আমাকেও আজ করতে হবে।
১৯ জুলাই ২০১৩, সকাল ৮:৩৮ মিনিট
০৯ রমজান
গতকাল ছিল বৃহষ্পতিবার। গাইনি ইউনিট-২ এর ভর্তির দিন। সকাল থেকেই নাকি খুব রোগীর চাপ। আমার ছিল সান্ধ্যকালীন ডিউটি। তড়িঘড়ি করে বেলা দুটো ত্রিশ মিনিটে রওয়ানা হলাম ওয়ার্ডের দিকে। ক্লাসে দেরিতে গেলেও ওয়ার্ডে লেট করেছি এমন নজির এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হয় নাই। পৌঁছাতে পৌঁছাতে পৌনে তিনটা।
ইভেনিং এ ছিল ইরানী আপুর ডিউটি। আপু লিখলাম যদিও, আমি সিনিয়র (সিএ/রেজিস্ট্রারদের) ম্যাডাম বলে ডাকতেই সাচ্ছ্যন্দ বোধ করি। ওটি তে ডাক পড়ল। ওই ধরা বাধা নিয়মে ওটির দায়িত্ব শেষ করতে করতে ইফতারের সময় হয়ে এল। তার আগেই ইরানী আপু ইফতার কিনতে পাঠালেন পাপন নামের এক সহকর্মী কে। ইফতারে অনেক খেলাম। ওটি শেষ করে আসতে আসতে দেখি রাত প্রায় ৯ টা বাজে। লেবার রুমে নতুন রোগী এসেছে একজন। আমি রিসিভ করতে চলে গেলাম। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখলাম বাচ্চা হতে অনেক দেরি তখন। এই করতে করতে সাড়ে নয়টা বেজে গেল। রাতের শিফটের ডক্টর চলে এসেছে। আহ শান্তি।
হোস্টেলে ফিরে দেখি ক্যাডেট কলেজের সহপাঠী ফজলে রাব্বি আমার হোস্টেলের সামনে। ওকে রুমে নিয়ে আসলাম। গল্প গুজব করে আইসক্রিম খাইতে খাইতে ওকে বিদায় দিলাম। আরও একটা অর্ডিনারী দিন কেটে গেল। এভাবেই আয়ু কমছে প্রতিমূহুর্তে। ইশ! দিনগুলো যদি সব ভাল কাজে পার করতে পারতাম!