আগামী রোববার সেমিনার!! প্রেজেন্টেশন করতে হবে আমাকে??

১৮ জুলাই, সকাল ১১ টা ৫০ মিনিট
০৮ রমজান

গাইনি ওয়ার্ডে নিয়মিত সেমিনার হয় বিভিন্ন ক্লিনিকাল কেস এর উপরে। নতুন কোনও রোগী আসলে তার উপর সেমিনার করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পরে সিএ রেজিস্ট্রার আপুরা। গত সেমিনার শেষে আমার নাম প্রস্তাব করা হল নেক্সট সেমিনার এর প্রেজেন্টার হিসেবে। প্রথমে ভেবেছিলাম Rupture Ectopic Pregnancy এর উপর একটা প্রেজেন্টেশন করি। কিন্তু রোগী তার সনো রিপোর্ট এবং অন্য অনেক কাগজই হারিয়ে ফেলেছে। তাই ওটার চিন্তা বাদ।

২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম আরেকটা কেস। টুইস্টেড ওভারিয়ান সিষ্ট। ইদানিং এটাও বেশ কমন একটা কেস। রোগীর নাম রাজিয়া। বয়স ১৪ বছর মাত্র। বেচারীকে এত অল্প বয়সেই একটা ডিম্বাশয় হারাতে হল। এই কেসটা দেখে আরেকটা কেসের কথা মনে পরে গেল।

৩৫ বছর বয়স্কা তাহেরা। এখনো বিয়ে হয় নি। ক্যারিয়ারের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ায় বোধ হয় বিয়ের পিড়িতে বসার ভাগ্য হয় নি। প্রচণ্ড পেট ব্যাথা নিয়ে সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি হল। আল্ট্রাসনো রিপোর্টে বলা হল Rupture Ectopic Pregnancy!!! বিয়ে না হতেই pregnant?? চিন্তা করেন সামাজিক অবস্থান কোথায় যাবে এই পরিবারটির??

তাকে পাঠানো হল গাইনি ওয়ার্ডে। আমি ডিউটি ডাক্তার। রিসিভ করেই সন্দেহ হল সনো রিপোর্ট নিয়ে। Resuscitation এর ব্যবস্থা করে সিনিয়রকে কল করলাম। তিনি রিপিট সনো করাতে বললেন। কাগজ লিখে দিলাম । সোনোলজিস্টকে স্পেশাল রিকোয়েস্ট করলাম যেন অতি দ্রুত একটা সনো করে Ectopic Pregnancy exclude করেন। উপরে বড় করে UNMARRIED লিখে দিলাম। রিপোর্ট হাতে আসলে দেখলাম TWISTED OVARIAN CYST.

ওটিতে পেশেন্টকে নিয়ে গেলাম। নাহ, আপাতত অপারেশন না করলেও চলবে। রোগীটার স্পেশাল কেয়ার নিলাম। প্রায় সব drug ই নিজ হাতে পুশ করলাম।  দায়িত্ব থেকে পলায়ন নয়, দায়িত্ব পালনেই প্রকৃত সুখ। কথাটা সেদিন আরেকবার উপলব্ধি করলাম।

0 comments:

Post a Comment